বামনের কথা জানি না। কিন্তু চীন হাত বাড়ালেই চাঁদের দেখা পায়, বটে। পৃথিবীর তৃতীয় জাতি হিসেবে চাঁদ জয়ের গৌরব তো তাদেরই আছে। এবং চাঁদের অচিন পিঠে, যেদিকটা সব সময় পৃথিবীর থেকে মুখ ফিরিয়ে রাখে, সেখানে নিরাপদে রোবট নামানোয় প্রথম রাষ্ট্র তারাই। এবার তারা চাঁদের চিরচেনা অংশে এমন এক অভিযান চালাতে যাচ্ছে, ৪৪ বছরে কোনো রাষ্ট্রই যার উদ্যোগ নেয়নি। চাঁদের মাটি কুড়াতে যাচ্ছে চীনের চন্দ্রযান চ্যাঙ-ই-৫।
চীনের রাষ্ট্রীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা সিএএসটিসি এ বিষয়ে প্রকাশ্যে কোনো খবর দেয়নি। তবে মার্কিন জাতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার তথ্যমতে, মঙ্গলবার উড়ে যাবে চ্যাঙ-ই-৫। সিএএসটিসির বরাতে বিজ্ঞানবিষয়ক অনলাইন গণমাধ্যম স্পেসডটকম জানিয়েছে, চন্দ্রযানটি হাইনান দ্বীপের ওয়েনচ্যাঙ মহাকাশ বন্দর থেকে উড়ে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত আছে।
অতীতে চ্যাঙ-ই-৪ চন্দ্রযানটি ২০১৯ সালের ৩ জানুয়ারি চাঁদের উল্টো পিঠে অবতরণ করে। ২০১৩ সালের ১৪ ডিসেম্বর চাঁদে প্রথম নামে নভোযান চ্যাঙ-ই-৩। আগামীতে ২০২৩ ও ২০২৪ সালে চ্যাঙ-ই-৬ ও চ্যাঙ-ই-৭ নভোযান দুটি চাঁদে অভিযান চালাবে। এমনকি অষ্টম চন্দ্রযানও প্রস্তুত করছে চীন।
পৃথিবীর একমাত্র প্রাকৃতিক উপগ্রহে চীনের আগে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র যন্ত্র নামাতে সক্ষম হয়েছে। সম্প্রতি ইসরায়েল ও ভারত এমন চেষ্টা করেও সফল হতে পারেনি। চাঁদে মানুষ অবতরণ করানোয় এখন পর্যন্ত একমাত্র সফল হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। চ্যাঙ-ই-৫ নামবে চাঁদের মনস রামকার আগ্নেয়টিলায়। এটি চওড়ায় ৭০ কিলোমিটার, সমভূমি থেকে উচ্চতা ১১০০ মিটার। জার্মান জ্যোতির্বিদ কার্ল রামকারের নামে এ চন্দ্রটিলার নামকরণ করা হয়।
চ্যাঙ-ই-৫ ২৪ নভেম্বর উড়ে যাবে, এ কথা বলা হয়েছে নাসার সাইটে। তবে চীন থেকে কোনো নিশ্চিত তথ্য পাওয়া আমাদের সময়-এর পক্ষে সম্ভব হয়নি। তবে, অক্টোবরে চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম চায়না ডেইলিকে এই অভিযানের জ্যেষ্ঠ এক নকাশাকর ইউ দেঙ্গুন জানিয়েছিলেন, চলতি বছরের শেষ দিকে অভিযানটি শুরু হবে।
১৯৫৯ সালে চাঁদে প্রথম অবতরণ করে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের চন্দ্রযান লুনা-২। ১৯৬৯ থেকে ১৯৭২ সাল পর্যন্ত চাঁদে ছয়টি অভিযান চালায় নাসা। চাঁদে পা রাখা ১২ মার্কিন নভোচারী ৩৮২ কেজি চাঁদের মাটি ও পাথর পৃথিবীতে নিয়ে এসেছেন।
সত্তরের দশকে সোভিয়েত রাশিয়াও অভিযান চালিয়ে চাঁদের নমুনা পৃথিবীতে নিয়ে আসে। সর্বশেষ ১৯৭৬ সালে তারা চন্দ্রনমুনা এনেছিল। এবার চাঁদ সেই লক্ষ্যপূরণে অভিযান চালাতে যাচ্ছে।
Leave a Reply